গত ২১ বছরে ৭০০০ লোক নৌ দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন এবং চালকদের অদক্ষতা ও অবহেলার কারণে দুর্ঘটনা বেশি হয়। নৌযানে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন বন্ধে স্বয়ংক্রিয় ডিভাইস তৈরির কাজ করবে ‘নিরাপদ নৌযাত্রা’ প্রকল্প।
নদীমাতৃক বাংলাদেশের নৌপথের দৈর্ঘ্য প্রায় ২৪০০০ কি.মি.। এ দেশের মোট ৩৫% যাত্রী, ৭০% পণ্য এবং ৯০% পেট্রোলিয়াম নৌ পথে পরিবাহিত হয়। যেসব এলাকায় সড়ক ও রেল যোগাযোগ সম্ভব নয় সেসব এলাকায় নৌ পথ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সারাদেশে প্রায় ১৫০০০ এর মত নৌযান অভ্যন্তরীণ নৌরূটে চলাচল করে। গড়ে প্রায় ৫০০০০ জন লোক নৌপথ ব্যবহার করে। গত ২১ বছরে ৭০০০ লোক নৌ দুর্ঘটনায় মারা যায়। যাত্রীবাহী নৌযানের ওভারলোডিং একটি নিয়মিত ঘটনা, বিশেষ করে বার্ষিক বিনোদনের সময়গুলোতে। যথোপযুক্ত টিকেটিং সিস্টেমের অভাবে নৌযানগুলোতে সঠিক যাত্রীর সংখ্যা নির্ণয় করা সম্ভব হয় না, ফলে খুব সহজে লঞ্চগুলোতে অতিরিক্ত যাত্রী ও পণ্য বোঝাই করা হয়। নৌপথ যাতায়াত ও পণ্য পরিবহনের একটি সহজলভ্য এবং সুবিধাজনক মাধ্যম, কিন্তু অতিরিক্ত যাত্রী এবং পণ্য পরিবহনের কারণে নদী পথে যাতায়াত ক্রমেই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ছে। আবার যাত্রীদের মধ্যেও যথেষ্ট সতর্কতার অভাব রয়েছে। বৈরী আবহাওয়া, ত্রুটিপূর্ণ নৌযান, অদক্ষ চালক/চালকের দায়িত্বে অবহেলা ও লঞ্চগুলোর পারস্পরিক সংঘর্ষের কারণে নৌদুর্ঘটনা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। এতে ওভারলোডিং দুর্ঘটনায় যোগ করছে নতুন মাত্রা।
এই ডিভাইসের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয় ভাবে যাত্রী সংখ্যা গণনা করবে, নৌযানের ধারণ ক্ষমতার বেশি যাত্রী বহন করলে যাত্রী সতর্কতার জন্য এলার্ম সিস্টেম ও প্রত্যেক ফ্লোরের প্রদর্শন পর্দা সতর্কতামূলক বার্তা দেখাবে। লঞ্চ ড্রাইভারের জন্য লঞ্চের লোডিং কন্ডিশন, রোলিং/পিচিং এর বার্তা দিবে এবং অতিরিক্তি যাত্রী না নামলে লঞ্চ স্টার্ট নিবে না। নৌযানটির সঠিক অবস্থান জানার জন্য GPRS নির্দেশক ব্যবস্থা এবং যে কোন কারণে ডুবে গেলে আন্ডার-ওয়াটার নির্দেশক ব্যবস্থা লঞ্চটি খুঁজে বের করতে সাহায্য করবে। লঞ্চগুলোর সার্বক্ষণিক মনিটরিং এর জন্য কমিনিউকেশন ব্যবস্থা এবং যাত্রী সংখ্যা, সার্ভে মেয়াদ ও লঞ্চের অন্যান্য তথ্যের জন্য ডাটাবেজ করা হবে, যাতে BIWTA লঞ্চের যে কোন তথ্য সহজেই জানতে পারে।