অনেক মানুষেরই দূরারোগ্য ব্যাধি থাকা সত্বেও দীর্ঘদিন ভালো ভাবে বেচে থাকার সম্ভাবনা থাকে যদি প্রাথমিক পর্যায়ে চিহ্নিত করা এবং সঠিক ভাবে পর্যবেক্ষন করা যায় তাহলে অনেক বড় বড় রোগ ও তদ-সংস্লিস্ট খরচের হাত থেকে বাচা যায়। আমাদের দেশে অনেক মানুষ আছে যারা দুরারোগ্য ব্যাধি (স্ট্রোক, স্ট্রোক পরবর্তি সমস্যা, ডায়াবেটিকস ইত্যাদি) তে আক্রান্ত বা পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মধ্যে আছেন। তাদের সুস্থ হয়ে ওঠার জন্য নিরবচ্ছিন্ন পর্যবেক্ষন ও সহায়তা জরুরী। এই ধরনের পর্যবেক্ষন সেবা পাওয়ার জন্য একজন রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় অথবা নিয়মিত ডাক্তারের কাছে যেতে হয়। মাঝে মাঝে তাদেরকে দীর্ঘ সময়ের জন্য হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হয়। এই ধরনের রুগীরাই হাসপাতালের বেডসমূহ দখল করে রাখে। তদুপরি বাংলাদেশের সুদুরতম অঞ্চলের (যেমন পঞ্চগড়) মানুষ যখন শারীরিক স্থিতিশীলতা পরীক্ষা নিরীক্ষা করার জন্য ঢাকাতে আসে তখন সেটা ঢাকার হাসপাতাল গুলোর জন্য মাত্রাতিরিক্ত চাপের কারন হয়ে দাড়ায়। এই মানুষ গুলোকে ঢাকাতে আসার জন্য দোষারোপ করা যায়না কারন আমাদের দেশের সবচেয়ে ভাল ডাক্তার এবং চিকিৎসাসেবা ঢাকার হাসপাতাল গুলোতেই পাওয়া যায়।
হাসপাতালের বেডগুলোর উপর চাপ কমাতে একটি ব্যাবস্থা গ্রহন করা যায় তাহলো এই রোগীদেরকে দুরবিক্ষন এর আওতায় নিয়ে আসা। একটি দূরবর্তী রোগী পর্যবেক্ষন ব্যাবস্থা (আর,পি,এম) এক্ষেত্রে ভাল সেবা দিতে পারে। দূরবর্তী রোগী পর্যবেক্ষন ব্যাবস্থা (আর,পি,এম) এমন একটি চলমান ব্যাবস্থা যেখানে একজন রোগী একটি ভ্রম্যমান চিকিৎসা যন্ত্র বহন করবে এবং নিয়মিত পরীক্ষা সমূহ সম্পাদন করে যথাসময়ে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের কাছে পাঠাবে। আর,পি,এম ব্যাবস্থার চমৎকার দিকটি হল এটি উন্মুক্ত এবং নমনীয়। আর,পি,এম প্রযুক্তি বলতে প্রাত্যহিক পর্যবেক্ষণ যন্ত্রাদি যেমন ডায়াবেটিকস রোগীদের জন্য গ্লুকোজ মিটার এবং হৃদযন্ত্রের সমস্যার ক্ষেত্রে রক্তচাপ ও হার্টরেট পর্যবেক্ষণ যন্ত্র বোঝায়। তথ্যসমূহ একটি রোগীর কম্পিউটার, স্মার্টফোন বা ট্যাবলেট পিসিতে ইন্সটলকৃত একটি সফটও্যার এর মাধ্যমে সরাসরি ডাক্তারের কাছে চলে যাবে। সেই সমস্ত তথ্য চিকিৎসকের কম্পিউটারের একটি বিশেষ ডাটাবেসে জমা হবে এবং চিকিৎসক সেটা তাৎক্ষনিক বা সময়মত দেখবেন। এছাড়াও তথ্যসমূহ ইন্টারনেটের সংযোগে অস্থায়ি ত্রুটির ক্ষেত্রে রোগীর কাছেও জমা থাকতে পারে। যে বিষয়টি লক্ষ রাখতে হবে তা হলো এই সব পর্যবেক্ষন যন্ত্রাদী যেন বিরুপ আবহাওয়াগত কারনে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় এবং রোগী নিজেই এটি বাড়িতে ব্যাবহার করতে পারে. আর,পি,এম বৃদ্ধ ও দূরারোগ্য রোগাক্রান্ত লোকদের জন্য ব্যাপক ফলপ্রসূ হবে এবং এই দুই শ্রেণীর লোকদেরই সবচেয়ে বেশি মেডিকেল সেবা প্রয়োজন হয়। দূরবীক্ষণ পদ্ধতি রোগী ও তার চিকিৎসকের জন্য রোগকে আরো নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণের এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে উপযুক্ত ব্যাবস্থা নিতে সহায়তা করবে। এই প্রজেক্টের লক্ষ্য হলো উপযুক্ত সফটও্যার তৈরীর মাধ্যমে আর,পি,এম এর ক্ষেত্র তৈরী করা যেটা বর্তমানে প্রযুক্তি নির্ভর ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার উদ্যোগের সাথে খুবই সামন্জস্যপূর্ন। এই সেবাটি স্মার্টফোন, কম্পিউটার বা ট্যাবলেট পিসির মাধ্যমে কাজ করবে।