মিসকেস নিষ্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রতার সমস্যা মোটামুটিভাবে সারা বাংলাদেশের প্রায় সব ভূমি অফিসেই আছে। এর সঙ্গে সাধারণ মানুষ, ভূমি অফিসের কর্মচারী, কর্মকর্তা এবং অফিসকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা এক শ্রেণির সুবিধাভোগী চক্র জড়িত। সেবাগ্রহীতাদের অসচেতনতা এবং আইনি ও দাপ্তরিক বিষয়ে ধারণার অভাব, ভূমি অফিস থেকে শুনানির তারিখ ঠিকভাবে বাদী ও বিবাদীদেরকে অবগত না করা, নির্ধারিত তারিখে কোনো কারণে শুনানি না হলে সংশ্লিষ্টদের হয়রানি, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও উকিলদের সেবার মানসিকতা, সততা ও আন্তরিকতার অভাব, দালালদের দৌরাত্ম্য ইত্যাদি এর জন্য দায়ী। ভূমি অফিসসমূহে নোটিশ জারিকারকের সংখ্যার তুলনায় নোটিশের আধিক্য এবং তাদের যানবাহনের না থাকাও এর জন্য দায়ী।নির্ধারিত তারিখে উভয়পক্ষের উপস্থিতি নিশ্চিত করে শুনানি গ্রহণ করতে পারলে ঐদিনই অধিকাংশ কেসের নিষ্পত্তি করা সম্ভব।
আবেদনের সময় অবশ্যই দাবীর স্বপক্ষে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল করতে হবে এবং বাদী-বিবাদী উভয়ের মোবাইল নম্বর লিখে দিতে হবে। সরাসরি হেল্পডেস্কে দায়িত্বরত সহকারীর নিকট অথবা অনলাইনে মিসকেসের আবেদন করার একটি ব্যবস্থা থাকবে। আবেদনকারী অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন দাখিল করতে পারবেন। আবেদন দাখিলের পর তাতে একটি মিসকেস নম্বর দিয়ে মিসকেসে বর্ণিত অভিযোগের বিষয়ে সরেজমিন তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য আবেদনটি সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন ভূমি অফিসে প্রেরণ করা হবে এবং একইসাথে প্রয়োজনীয় দলিলপত্রসহ উপস্থিত থাকার জন্য উভয়পক্ষকে নির্ধারিত শুনানীর তারিখে উপস্থিত থাকার জন্য নোটিশ করা হবে। ইউনিয়ন ভূমি অফিস থেকে প্রতিবেদন পাওয়ার পর যদি দেখা যায়, অভিযোগটির কোনো ভিত্তি নেই, তাহলে আবেদন নথিজাত করা হবে। আর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের প্রতিবেদনের আলোকে যদি অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়, তাহলে শুনানীর প্রথম দিনই সম্ভব হলে নিষ্পত্তি করা হবে। যদি কেউ মিসকেসের আবেদন লেখা এবং কি কি কাগজপত্র দিতে হবে তা না বোঝেন, তাহলে তাকে ভূমি অফিসে স্থাপিত ‘হেল্পডেস্ক’ (Help Desk) থেকে পরামর্শ ও সহায়তা গ্রহণ করতে হবে অথবা এ জন্য নির্ধারিত লিফলেটটির মাধ্যমেও তিনি তা জানতে পারবেন। সংশ্লিষ্ট পক্ষগণকে নোটিশ করা হবে এবং মোবাইলে এসএমএসের মাধ্যমে শুনানির তারিখ জানিয়ে দেওয়া হবে। ধার্য তারিখে কোন কোন মিসকেসের শুনানি হবে, তা অফিসের ফেসবুক পেইজেও জানানো হবে।এছাড়া মিসকেস নোটিশবোর্ডের মাধ্যমেও সেবাগ্যহীতাকে তারিখ জানানোর ব্যবস্থা করা হবে। উভয়পক্ষের উপস্থিতিতে শুনানি গ্রহণ করে কেস নিষ্পত্তি করা সম্ভব না হলে অথবা কোনো কেসে জটিলতা থাকলে সে বিষয়ে কানুনগো বা সার্ভেয়ারের প্রতিবেদন চাওয়া যেতে পারে এবং প্রয়োজনে অধিকতর শুনানি গ্রহণ করা যেতে পারে। যদি কোনো কারণে ধার্য তারিখে সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রশাসনিক ব্যস্ততার জন্য বা অন্য কোনো কারণে শুনানি গ্রহণ করতে না পারেন, তাহলে কমপক্ষে একদিন আগে বাদী ও বিবাদীর মোবাইলে মেসেজ পাঠানো হবে এবং ফেসবুকেও বিষয়টি জানিয়ে দেয়া হবে। এর ফলে তাদেরকে নির্ধারিত তারিখে আর অফিসে এসে হয়রান হতে হবে না। পরবর্তী নতুন তারিখটিও একই মেসেজে জানিয়ে দেয়া হবে। এছাড়া নোটিশবোর্ডের মাধ্যমেও সবাই বিষয়টি জানতে পারবেন। কেস চলাকালীন সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তি কেসের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে তথ্য জানতে চাইলে তিনি ওয়েব সাইটে কেসের নম্বর এন্ট্রি দিয়ে সর্বশেষ অবস্থা, শুনানির তারিখ ইত্যাদি জানতে (কেস ট্র্যাকিং) পারবেন। কেস নিষ্পত্তি হয়ে গেলে উক্ত তথ্য মোবাইলে এসএমএসের মাধ্যমে জানানো হবে।