বাংলাদেশে মোট আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ ৮৫ লা ৬০ হাজার ৯৬৪ হেক্টর, যার মধ্যে মোট সেচকৃত জমি ৭৪ লাখ ৬ হাজার ৮২২ হেক্টর। এর বিপরীতে আবাদযোগ্য পতিত জমি পড়ে আছে ২ লাখ ১০ হাজার ২৭ হেক্টর। এর বিপরীতে কৃষিতে আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার অতি নগন্য। চাষের জন্য প্রাথমিকভাবে প্রয়োজনীয় ট্রাক্টর ও পাওয়ার টিলার প্রাপ্তিতে পুরোপুরি আমদানী নির্ভরতা রয়েছে। এক্ষেত্রে আমদানী নির্ভরতা কমিয়ে দেশীয় প্রযুক্তিতে স্বল্পমূল্যের পাওয়ার টিলার উদ্ভাবন করা হবে এই প্রকল্পে।
বাংলাদেশ একটি কৃষিপ্রধান দেশ হলেও কৃষিতে আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার অতি নগন্য। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে কোনো পাওয়ার টিলার উৎপাদন হয় না বিধায় আমদানীর উপর নির্ভর করতে হয়। এই পাওয়ার টিলারের মূল্য বেশী হওয়ায় অধিকাংশ দরিদ্র কৃষকের পক্ষে তা ক্রয় করা সম্ভব হয় না। এজন্য গরু, মহিষ টানা লাঙ্গলের পাশাপাশি ব্যবসায়িকভাবে পরিচালিত পাওয়ার টিলারে তাদের সময় ও শ্রম ব্যয় হয় বেশি। হাল চাষের মান যথাযথ না হওয়ায় ফসলের উৎপাদন উন্নত দেশের তুলনায় কম হয়। একারণে অনেক সময় অর্থের অভাবে আবাদযোগ্য কৃষি জমি পতিত রাখেন কৃষক।
এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো বিদেশ নির্ভরশীলতা কমিয়ে স্বল্প খরচে দেশীয় উপযোগী টেকসই পাওয়ার টিলার উদ্ভাবন করা। প্রথম ধাপে এম এম সিট, ফ্ল্যাট বার, অ্যাঙ্গেল ইত্যাদি বডি এবঙ পার গিয়ার বক্স তৈরি করে পরবর্তীতে অন্যান্য সকল যন্ত্রাংশ সংযোজন করে পূর্ণাঙ্গ পাওয়ার টিলার তৈরী করা। পাওয়ার টিলারের কর্ষণ কাজ ছাড়া পানি সেচ দেয়ার জন্য পানির পাম্প সংযুক্ত থাকবে। যা আমাদানীকৃত পাওয়ার টিলারে নেই। সেচযন্ত্রের জন্য পৃথক পানির পাম্প ক্রয়ের প্রয়োজন নাই। আমার উদ্ভাবিত পাওয়ার টিলারে ধান-গম, ভূট্টা ও রবি শস্য মাড়াই যন্ত্র পরিচালনার জন্য অতিরিক্ত পুলি ও বেল্ট থাকবে। যার সাথে একটি লিভারের সাহায্যে সহজেই সংযোগ স্থাপন করা যাবে। নতুন উদ্ভাবিত পাওয়ার টিলারে ঢিলা ভাঙ্গার জন্য অতিরিক্ত যন্ত্রাংশের সংযোগ থাকবে, যা দ্বারা ঢিলা ভাঙ্গা সহজ হবে। প্রচলিত পাওয়ার টিলারের মত মালামাল পরিবহন, ক্ষেতে মই দেয়া, শুকনা ও কাঁদা জমিতে চাষ দেয়ার প্রক্রিয়াতো থাকবেই।