গ্রামাঞ্চলে চিকিৎসকের অপর্যাপ্ততা আর প্রান্তিক মানুষের সামর্থ্যের কথা বিবেচনায় নিয়ে টেলিমেডিসিন ছড়িয়ে দেওয়ার এই উদ্যোগ। যোগ্যতাসম্পন্ন ডাক্তারেরা শহরে বসেই গ্রামীণ রোগীদেরকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে কথা বলে ও ছবি দেখে পরামর্শ দিতে পারবেন – বাংলাদেশে বেশ কটি দল এ চেষ্টা চালিয়েও যাচ্ছে। এ টেলিমেডিসিন ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিকেল ফিজিক্স এন্ড টেকনোলজি বিভাগে স্টেথোস্কোপ, ইসিজি ইত্যাদি অনলাইন যন্ত্র তৈরী করে কম্পিউটারে জুড়ে প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার নিজেরাই উন্নয়ন করেছে। তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে সারাদেশে এই সেবা ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশের প্রায় ৭০% মানুষ গ্রামে বাস করে যেখানে কোন ডাক্তার নেই। অমসৃণ গ্রামীণ পথে অনেক মাইল পথ পেরিয়ে সবচেয়ে কাছের হাসপাতালে যেতে হয়, সেখানেও অনেকটা সময় অপেক্ষা করতে হয় লম্বা লাইনে, প্রয়োজনের তুলনায় ডাক্তার কম থাকার কারণে। তাই বেশীরভাগ মানুষের, বিশেষ করে মহিলা, শিশু, পঙ্গু বা বৃদ্ধদেরকে প্রাথমিক/মাধ্যমিক স্তরের রোগে চিকিৎসা না নিয়েই কাটাতে হয়, অথবা এমন ব্যক্তিদের কাছ থেকে চিকিৎসা নিতে হয় যাদের প্রয়োজনীয় যোগ্যতা নেই। ফলে অনেক সময়েই রোগ জটিল হয়ে যায়, কখনও সারা জীবনের জন্য অক্ষমতা, এমনকি মৃত্যুও এসে যেতে পারে। তা ছাড়া এ ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহারের কারণে আজ সারা পৃথিবী এক মহামারী-আতঙ্কের সম্মুখীন হয়ে পড়েছে।
এর বাস্তব সমাধান হচ্ছে, টেলিমেডিসিন, বা ‘দূর থেকে চিকিৎসা’। যোগ্যতাসম্পন্ন ডাক্তারেরা শহরে বসেই গ্রামীণ রোগীদেরকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে কথা বলে ও ছবি দেখে পরামর্শ দিতে পারবেন – বাংলাদেশে বেশ কটি দল এ চেষ্টা চালিয়েও যাচ্ছে। এ টেলিমেডিসিন ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করার জন্য আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিকেল ফিজিক্স এন্ড টেকনোলজি বিভাগে স্টেথোস্কোপ, ইসিজি ইত্যাদি অনলাইন যন্ত্র তৈরী করে কম্পিউটারে জুড়ে প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার নিজেরাই উন্নয়ন করে নিয়েছি। নিজেরাই প্রযুক্তি উন্নয়ন ও তৈরী করার ফলে একদিকে যেমন খরচ অনেক কম পড়ছে, অপর দিকে স্থানীয়ভাবে মেরামত, রক্ষণাবেক্ষণ ও প্রয়োজনে উন্নত করার সুবিধা থাকার কারণে এ সব যন্ত্রপাতির আয়ুস্কালও অনেক বেশী পাওয়া যাচ্ছে। পাশাপাশি আমরা একটি স্বনির্ভর সেবা ব্যবস্থা চালু করেছি যেখানে একজন গ্রামীণ উদ্যোক্তা টেলিমেডিসিন কেন্দ্র স্থাপন করে আমাদের নিয়োজিত ডাক্তারের মাধ্যমে সেখানকার রোগীদেরকে চিকিৎসা পরামর্শ দিচ্ছেন; রোগীর কাছ থেকে নেয়া ফিস এর মাধ্যমে সবার খরচ পুষিয়ে নেয়া যাবে আশা করা যাচ্ছে। ইদানীং যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে এ সেবাটিকে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় টেলিমেডিসিন প্রোগ্রাম’ নামে অভিহিত করে সারা বাংলাদেশে সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।