বাংলাদেশের দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের সংখ্যা আড়াই লাখে দাঁড়িয়েছে। এর মাঝে বহুসংখ্যক দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করছে, স্বাক্ষর রাখছে নিজেদের মেধা ও যোগ্যতার। কিন্তু তাদের জন্য সহায়ক ব্রেইল পদ্ধতির বই প্রাপ্তি ব্যয়বহুল ও সময় সাপেক্ষ। এর বিপরীতে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য বইয়ের অডিও এবং প্রতিবন্ধীদের উপযোগী বই তৈরির জন্য এটুআই প্রকল্পের সার্ভিস ইনোভেশন ফান্ডের ‘মাল্টিমিডিয়া টকিং বুক’ প্রকল্প।
প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার মাধ্যম হিসেবে ব্রেইল ব্যবহার করে থাকেন। ব্রেইল বই তৈরি ব্যয়বহুল ও সম সাপেক্ষ বিধায় শিক্ষার্থীরা সময়মত বই পায় না। ফলে তাদের পড়াশোনা ব্যহত হয়। তাছাড়া ব্রেইল বইয়ের বাইরে অন্য কোনো কনটেন্টও তাদের দেওয়া সম্ভব হয় না।
এটুআই প্রকল্পের সার্ভিস ইনোভেশন ফান্ডের আওতায় ইয়ং পাওয়ার ইন সোশ্যাল অ্যাকশন (ইপসা) প্রথম- অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত সকল বই ও নবম-দশম শ্রেণীর মানবিক বিভাগের পাঠ্যবই “ডেইজি মাল্টিমিডিয়া বই” আকারে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীসহ সকল শিক্ষার্থীর উপযোগী করে তৈরি করেছে। এর মাধ্যমে দৃষ্টি ও শ্রবণ প্রতিবন্ধীসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস এবং কম্পিউটারে সহজেই পাঠের বিষয়বস্তু শুনতে ও পড়ে বুঝতে পারবেন। ইউনিকোডে প্রণীত বইগুলো ডিজিটাল ভার্সনে থাকায় এর টেক্সট সহজে ব্যবহার করে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসের কনটেন্ট তৈরি করা যাবে এবং সহজে ব্রেইলে রূপান্তর সম্ভব হচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর গণভবনে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর হাতে বিনামূল্যে বই বিতরণ কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের মাল্টিমিডিয়া বই ও ব্রেইল বই বিতরণ করেন। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) এখন থেকে প্রতি বছর অন্যান্য বইয়ের পাশাপাশি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য মাল্টিমিডিয়া এবং ব্রেইল বই বছরের শুরুতে নিশ্চিত করবে।